কী করছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা এবং কখন কখন বড়দের সাহায্য চাইতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত ধারণা

অনলাইন জগতে শিশুরা খেলতে, পড়তে, শিখতে, উদ্ভাবন করতে শিখে অনলাইন জগত শিশুদেরকে একটি অপার সম্ভাবনার পথ তৈরি করে দিয়েছে। বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইন জগত দুটি ভিন্ন কোন জগত নয় এরা পরস্পর সমান্তরালভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এর সমস্ত কিছুই বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত। তবে শিশুরা যেমন অনলাইন থেকে উপকৃত হচ্ছে তেমনি বিভিন্ন ঝুঁকিতেও পড়তে পারে।

 শিশুরা অনলাইনে  কী কী করতে পারে?

প্রযুক্তি এবং অনলাইন জগত শিশুদের কে নানা উপায়ে সহযোগিতা করে থাকে। এটি তাদেরকে শেখাতে, সৃজনশীল হতে এবং পরিবারের সাথে যুক্ত হতে সহযোগিতা করে থাকে।

 শেখা: ইন্টারনেট হচ্ছে তথ্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার। এর মাধ্যমে শিশুরা এই বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারে। একে তারা তাদের দৈনন্দিন পড়াশুনার কাজে তারা ব্যবহার করতে পারে। তারা  বিদ্যালয় থেকে বাড়ির কাজ নিয়ে এসে সেসব ইন্টারনেট ঘেঁটে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারে এবং বাড়ীর কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সহায়তা নিতে পারে। প্রয়োজনে স্কুলের শিক্ষকদের কাছে দেখাতে পারে।

 খেলাধুলা: সব শিশুরা খেলতে পছন্দ করে। ইন্টারনেট তাদের জন্য খেলার বিশাল দরজা খুলে রেখেছে। ইন্টারনেটে অনেক শিক্ষামূলক গেম রয়েছে যার মাধ্যমে শিশুরা তাদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারে। এসব গেমের মধ্যে অনেকগুলো তাদেরকে সামাজিকভাবে যুক্ত হতে সহযোগিতা করে।

 সামাজিক যোগাযোগ: শিশুরা সবসময় বন্ধুদের সাথে থাকতে পছন্দ করে আর ইন্টারনেট শিশুদের জন্য একটি দ্বার খুলে রেখেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পরিবার, বন্ধুদের সাথে যুক্ত হতে পারে যা তাদের আরও সামাজিক ও সহনশীল হতে সাহায্য করে।

 বিনোদন: অনলাইনে শিশুদের জন্য বিভিন্ন বিনোদন মাধ্যম আছে যেগুলো  ব্যবহার করে শিশুরা তাদের অবসর সময় কাটাতে পারে।

ইন্টারনেট কি শিশুদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে?

ইন্টারনেট শিশুদের অনেক উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। ইন্টারনেট অনেক সময় শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিশুরা অনেক সময় তাদের অজ্ঞতার কারণে স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে ফেলতে পারে। এগুলো সাইবার সন্ত্রাসীদের কাছে তাদের ঝুঁকি কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।আবার অনেক সময় তারা বিভিন্ন ভুল ওয়েব সাইটে ঢুকে পড়তে পারে যা নির্দিষ্ট বয়স সীমার জন্য উপযোগী, শিশুদের জন্য নয়। এইগুলোও তাদের মানসিক ও শারীরিক ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

 কখন কখন বড়দের সাহায্য চাইতে হবে তা নিয়ে ধারণা

অনলাইনে সবসময় শিশুদের নিরাপদ রাখতে তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনাই সবচেয়ে ভাল উপায় হতে পারে। শিশুদের সাথে সবসময় যোগাযোগ বহাল রাখতে হবে তারা কোথায় কী করছে, কী দেখছে, কাদের সাথে অনলাইনে কথা বলছে। শিশুর সাথে সুন্দর এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখলে যেকোনো অসুবিধায় বা বিপদে শিশু আপনাকে তার সমস্যার কথা বলবে। এই স্বাভাবিক পরিবেশটা না থাকলে বড় ধরনের অনেক বিপদেও শিশুর কাছ থেকে কিছুই জানতে পারবেন না। কেমন পরিস্থিতিতে পড়লে শিশু আপনার সাথে যোগাযোগ করবে সে সম্পর্কে জেনে নিই চলুন –

১। অনলাইন মাধ্যমে যেকোনো কিছু বুঝতে না পারলে

২। নতুন কোন ডিভাইস বা অ্যাপ ব্যবহার করতে গেলে

৩। ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে কোন বিপদে পড়লে

৪। যেকোনো ধরনের অনলাইন জালিয়াতির শিকার হলে

৫। অপরিচিত এবং সন্দেহজনক কারো সাথে যোগাযোগ থাকলে

৬। ভুল করে কোন বয়স সীমার বাইরের ওয়েবসাইটে চলে গেলে

সাইবার অপরাধীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে তাদের মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন আসতে পারে। অভিভাবকরা শিশুদের কোন পরিবর্তন দেখতে পারলে তাদেরকে সময় দিতে হবে। তারা কী বলতে চায় তা শুনতে হবে এবং সমস্যা অনুযায়ী তার সমাধান দিতে হবে।