অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং

তুমি কি ‘হ্যাকিং’ শব্দটির সাথে পরিচিত?

হ্যাকিং হলো কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। সহজ কথায় বলতে গেলে, অসৎ উদ্দেশ্যে (যেমন- তথ্য, ফাইল ইত্যাদি চুরি বা পরিবর্তন) কম্পিউটারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করাকে হ্যাকিং বলা হয়ে থাকে।

ইন্টারনেট নির্ভর জীবনযাপন করতে গিয়ে বর্তমানে আমরা যে সকল ঝুঁকির সম্মুখীন হই তার মধ্যে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং অন্যতম। অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে, গেমস খেলতে কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কেনাকাটা করতে, শিক্ষামূলক ভিডিও দেখতে শিশু-কিশোর নির্বিশেষে প্রায় সকলেরই গুগল অ্যাকাউন্ট থাকে। এই অ্যাকাউন্ট অসাবধানতার কারণে হ্যাকিং এর শিকার হতে পারে।  

যারা হ্যাকিং করে তাদেরকে হ্যাকার বলা হয়। অসৎ ব্যক্তিরা বিভিন্ন কারণে হ্যাকিং করে থাকে। যেমন-

ক) আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে - হ্যাকাররা ক্রেডিট কার্ড নম্বর চুরি করা, একাউন্ট সম্পর্কিত স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ বা সম্পূর্ণ ব্যাংকিং সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হ্যাক করে থাকে।

খ) কর্পোরেট বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে গুপ্তচরবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে – অনেক সময়ে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের হ্যাকাররা সুবিধা অর্জনের জন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য এবং পরিষেবাগুলির তথ্য চুরি করে থাকে।

গ) জাতীয় নথিপত্র চুরির উদ্দেশ্যে – আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তারের জন্য অনেক সময়ে শক্তিশালী দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিযোগী দেশের জাতীয়, স্পর্শকাতর এবং গুরূত্ববহ তথ্য চুরি করে থাকে।

 কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তুমি তোমার অ্যাকাউন্টকে হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারো। যেমন-

-              ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময়ে কম্পিউটার সিস্টেম/ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালি করা। এজন্য ইসেট (ESET), ক্যাস্পারস্কি (Kaspersky), অ্যাভাস্ট (Avast) ইত্যাদি সফটওয়্যার গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা ব্যবহার করা যায়।

-              কোনো অ্যাপ্ ডাউনলোড ও ব্যবহারের পূর্বে তোমাকে এর উৎসের নির্ভরযোগ্যতা ও যথার্থতা যাচাই করে নিতে হবে। ‘প্লে স্টোরে’ বিভিন্ন অ্যাপের রিভিউ দেওয়া থাকে। তাছাড়া, অন্যান্য ব্যবহারকারীরাও নিজেদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা প্লে স্টোরের মতামত সেকশনে লিখে রাখে। তুমি কোনো অ্যাপ ডাউনলোড ও ব্যবহারের পূর্বে  এই সকল রিভিউ এবং মতামত যাচাই করে নিতে পারো।

-              তোমার ব্যবহৃত সফটওয়্যারগুলো নিয়মিত হালনাগাদ (আপডেট) করে রাখবে। এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত উৎস থেকে হালনাগাদ (আপডেট) ফাইল নামাতে হবে। তুমি গুগল প্লে স্টোর (Google Play Store) , আই টিউন্স (iTunes), সফটোনিক (Softonic), সফটপিডিয়া (Softpedia) ইত্যাদি সাইটগুলি থেকে এসব নির্ভরযোগ্য আপডেটসমূহ ডাউনলোড করতে পারবে।

-              ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন সময়ে অপরিচিত এবং অপ্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট ও লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকবে। থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে।

- এছাড়া জরুরি ফাইল বা তথ্যের ব্যাকআপ রাখতে হবে এবং তা একাধিক জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে যেন হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে তা দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায়। 

 এই কাজগুলি করার মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।