অ্যাকাউন্টে থার্ড পার্টি অ্যাপ সংযুক্তিকরণ বিষয়ে সতর্কতাবাণী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে প্রায়শই দেখা যায় যে বন্ধুরা কিছু মজার তথ্য শেয়ার করছে। যেমনঃ ‘আগামী বছরে আপনার সাথে কোন ৫ টি ঘটনা ঘটবে?’ অথবা ‘কোন বিখ্যাত ব্যক্তির সাথে আপনার চেহারার মিল রয়েছে?’ অথবা ‘ভবিষ্যতে আপনার কেনা গাড়িটি দেখতে কেমন হবে?’

বিভিন্ন আকর্ষণীয় জীবনযাপনের মুহূর্ত, দামী মডেলের গাড়ি, কিংবা পছন্দের নায়ক/নায়িকার সাথে মিল দেখানোর কারণে এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমরা খুব সহজেই লিঙ্কগুলোতে প্রবেশ করে থাকি। এরপরে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য আমাদেরকে ওয়েবসাইটগুলোতে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হয় কিংবা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশ এবং সেগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিতে হয়। এভাবেই আমরা খুব সহজেই একটি অপরিচিত জায়গায় প্রতিনিয়ত নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করে ফেলছি। 

 সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অথবা কোনো ব্রাউজার ব্যবহার করার সময়ে কখনো কোনো সুবিধা গ্রহণ করতে যেয়ে আপনাকে নতুন করে ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হয়েছে কী? সাধারণতঃ থার্ড পার্টি অ্যাপগুলো থেকে সেবাগ্রহণের জন্যই এভাবে তথ্য প্রদান করতে হয়।

 থার্ড পার্টি অ্যাপ কী?

থার্ড পার্টি অ্যাপ বলতে আমরা সেই সকল অ্যাপকে বুঝি, যাদেরকে মোবাইল ডিভাইস অথবা অপারেটিং সিস্টেম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তৈরি করেনি।

 ফেসবুকের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টি অ্যাপ বলতে এমন সকল সেবাকে বুঝানো হয়, ‘যারা কোনো বিশেষায়িত সেবাপ্রদান করে থাকে কিন্তু, সেইসকল সেবা গ্রহণ করতে হলে ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া তথ্যাদি পুনরায় লিখতে হয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে ফেসবুকে প্রদত্ত তথ্যের ব্যবহারের অনুমতিও দিতে হয়। কুইজস্টার্ট, ওএমজি ইত্যাদি হলো ফেসবুকে বহুল প্রচলিত থার্ড পার্টি অ্যাপ।

 থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহারে সমস্যা কী?

আপনি যখন থার্ড পার্টি অ্যাপে তথ্য প্রদান করেন তখন সেগুলি তাদের সার্ভারে অনুলিপি হিসেবে সংরক্ষিত থাকে এবং এসব তথ্য অনেকক্ষেত্রে চুরিও হতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপে আপনার তথ্য শেয়ার করার ফলে এসব তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে পারে, পরবর্তীতে এর ফলে হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

 এ ধরনের হয়রানি থেকে বাঁচতে করণীয়:

১. থার্ড পার্টি নিরাপত্তা পরিমাপক টুলস দ্বারা নিয়মিত পরীক্ষা করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কোন ধরণের অ্যাপের কাছে আপনার কী কী তথ্য সংরক্ষিত আছে এবং প্রয়োজনে তথ্যাদি মুছে ফেলার ও সুযোগ পাবেন।

 ২.পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা থেকে এড়িয়ে চললে হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে একটি অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। 

 আপনার ফেসবুকে কোনো থার্ড পার্টি অ্যাপ সংযুক্ত কিনা কীভাবে বুঝবেন?

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি কী কী থার্ড পার্টি অ্যাপে সংযুক্ত আছেন জানতে প্রথমে আপনার ফেসবুকের ‘সেটিংস’ অপশনে যেতে হবে। সেখানে ‘অ্যাপস এন্ড ওয়েবসাইট’ অংশে প্রবেশ করে ‘লগড ইন উইথ ফেসবুক’ লেখা বিকল্পটিতে খুঁজে পাবেন। এই অংশে প্রবেশ করলেই আপনি জানতে পারবেন আপনি কী কী থার্ড পার্টি অ্যাপের সাথে সংযুক্ত আছেন। 

 থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার এড়াতে করণীয়:

১. প্রথমে আপনার Google অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসী বিভাগে যান

২. "অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস সহ থার্ড-পার্টি অ্যাপস"-এর অধীনে থার্ড-পার্টি অ্যাক্সেস ব্যবস্থাপনার অংশটিতে প্রবেশ করুন।

৩. আপনি যে অ্যাপ বা পরিসেবাটি এড়িয়ে যেতে চান সেটি নির্বাচন করুন। 

৪. ‘এড়িয়ে যান’ অপশনটি নির্বাচন করুন।

 এভাবেই খুব সহজেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারকে থার্ড পার্টি অ্যাপ থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব।