Procedures/techniques/steps for verifying the accuracy, reliability and credibility of information before using it on the Internet or social media

হোসেন মিয়া একজন কৃষক। তার ছেলে শহরে চাকরি করে; বাবার সাথে যোগাযোগের জন্য বাবাকে একটা মুঠোফোন কিনে দিয়ে তাতে একটা ফেসবুক একাউন্টও খুলে দিলেন। সে মাঝে মাঝে সময় পেলে ফেসবুক থেকে বিভিন্ন খবর পড়ে। এরকম একদিন একটা খবরে দেখলেন, ফসলে “ডায়মণ্ড সার” নামক এক ধরনের সার ব্যবহার করলে ফলন দ্বিগুণ হবে। সে ভাবলেন তার ছেলের সাথে আলাপ করবে কোথা থেকে এই সার পাওয়া যাবে। তার ছেলের সাথে আলাপ করলে তাকে জানায় যে, যেকোনো উৎসের তথ্যই বিশ্বাস করা যাবে না। আগে যাচাই করে নিতে হবে তথ্যটি আসলেই সত্য কিনা।

এরকম আরও বিভিন্ন রকমের তথ্য আমরা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে পেয়ে থাকি। সব তথ্যই কিন্তু আমরা বিশ্বাস করে নিতে পারি না। কেননা বর্তমান সময়ে নতুন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি। যে কোনো আলোচিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুয়া খবর ভাইরাল হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। ভুয়া খবরের কারণে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা, সংঘাত, হানাহানি থেকে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। আবার ভূয়া খবর বা বার্তার মাধ্যমে স্প্যাম ছড়িয়ে ঘটতে পারে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি, তথ্য চুরি, প্রাইভেসি বিনষ্ট হওয়ার মত নানাবিধ সমস্যা। তাই ভূয়া খবর সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। যেকোন তথ্য প্রকাশ বা শেয়ার করার আগে তথ্যের সঠিকতা যাচাই বাছাই করে নিতে হবে।  

 

তথ্যের সঠিকতা যাচাই বাছাই করার কৌশল: 

 

নিম্নলিখিত বিষয়গুলো ভালো করে খেয়াল করলেই তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। 

সন্দেহজনক শিরোনাম: কোন খবরের শিরোনাম বেশি চিত্তাকর্ষক হলে এবং তাতে অত্যাধিক বিস্ময় সূচক বা প্রশ্ন চিহ্ন থাকলে সতর্ক হতে হবে। এমনকি, হেডলাইনের শব্দগুলি যদি অত্যাধিক বোল্ড-এ লেখা থাকে ও অবিশ্বাস্য কিছু দাবি করা হয়, তাহলে এগুলি ফেক নিউজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

 

ইউআরএল-টি ভালো করে চেক করে নিবেন: সাধারণত কোন ভুয়া ওয়েবসাইট থেকে বা প্রতিষ্ঠিত কোন ওয়েব সাইটের কাছাকাছি নামে নতুন ওয়েব সাইট করে সেখান থেকে ফেক নিউজ প্রকাশ করা হয়। তাই কোন খবর সন্দেহজনক মনে হলে ওয়েব সাইটটির বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। বিশ্বের ওয়েবসাইট ঠিকানার বিষয়াদি দেখভাল করে থাকে আইক্যান (ICANN)। কোন ওয়েবসাইট নিয়ে সন্দেহ হলে, আইক্যানের ডোমেইন অনুসন্ধান পাতায় গিয়ে তাদের ওয়েবসাইট ঠিকানাটি লিখবেন। https://whois.icann.org/en  এই পাতায় গিয়ে দেখতে পাবেন, ওয়েবসাইটটি কবে তৈরি হয়েছে, কে তৈরি করেছে। সাধারণত ভুয়া ওয়েব সাইটের নির্মাতাদের পরিচয় লুকানো থাকে এবং অসম্পূর্ণ তথ্য থাকে।  

 

ছবি যাচাই: অনেক সময় পুরানো কোনো ছবি এডিট করে ভূয়া তথ্য ছড়ানোর সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তাই সন্দেহজনক খবরের সাথে কোন ছবি থাকলে তা যাচাই করতে হবে। ছবি যাচাই করার জন্য  https://images.google.com/  ঠিকানায় গিয়ে ছবি বা ছবির লিংকটি সার্চ মেনুতে ড্রপ করতে হবে। সেখান থেকেই জানা যাবে ছবিটি প্রথম কবে এবং কী প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেটে আপলোড করা হয়েছিল। এভাবে ছবির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। 

 

সংবাদ মাধ্যমে যাচাই: সন্দেহজনক কোন ঘটনা বা সন্দেহজনক কোন ঘটনার তারিখ খেয়াল করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যমে ঐ তারিখে ঘটনাটি সার্চ দিতে হবে। প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যমগুলোতে সন্দেহজনক ঘটনাটির কোন তথ্য না থাকলে নিশ্চিত থাকুন ঘটনাটি ভুয়া।

আমাদের সবাইকেই বিভিন্ন তথ্যের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়; তথ্য অনুসন্ধান করতে হয়। শুধুমাত্র উপরের বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা তথ্যগুলো বিশ্বাস করব। এছাড়া অন্য কোনো তথ্য প্রকাশ এবং বিশ্বাস করা থেকে নিজেদের বিরত রাখব।