শিক্ষামূলক বিভিন্ন কাজ জমা দিতে ইমেইল করা (ফাইল সংযুক্ত করা)

আমরা কি আমাদের সব আত্বীয়-স্বজনকে নিয়ে একই শহরে বসবাস করি? যারা অন্য শহরে থাকে আমরা তাদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করি? তোমরা হয়ত সবাই বলবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। কিন্তু যদি কোনো প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র পাঠাতে হয় তাহলে কিভাবে সেটি তোমরা তাদের কাছে পৌঁছাবে? পূর্বে চিঠির মাধ্যমে আমরা এই কাজটি করতাম।

তাহলে কি বলতে পারবা চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমরা কী করি? আমরা দূরের কারো কাছে আমাদের প্রয়োজনীয় কথা বার্তা, এমনকি অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র, ছবি ও পাঠিয়ে থাকি।

পূর্বে এই চিঠি পাঠানোর খুব প্রচলন ছিলো। অফিস, আদালতে, স্কুলে বা পারিবারিক প্রয়োজনে প্রচুর চিঠির আদান প্রদান হতো। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে চিঠির আদান প্রদানও সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। অফিস আদালতের খুব সীমিত কার্যক্রমে এখন চিঠির আদান প্রদান হয়ে থাকে।

কিছু দিন আগেও স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীকে ছুটির জন্য বা বিভিন্ন প্রয়োজনে দরখাস্ত লিখতে হতো। কিন্তু, বর্তমানে এই সকল কাজের জন্য চিঠি ও দরখাস্ত লেখার জায়গাটি দখল করে নিয়েছে নতুন একটি প্রথা। সেটি হলো ইমেইল প্রথা। এভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়মিত ইমেইল করতে হয়।

ধরো, তোমার গণিত শিক্ষক তোমাদেরকে আজকে যোগ করা শিখিয়েছেন এবং বাড়িতে অনুশীলনের জন্য কিছু যোগের সমস্যা দিয়ে দিলেন। তিনি তোমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে সেগুলোর ছবি তুলে তাঁর ইমেইল এড্রেসে বা ইমেইল ঠিকানায় ইমেইল করার জন্য নির্দেশনা দিলেন।

তাহলে, এখন আমাদের জানতে হবে যে কীভাবে সঠিক উপায়ে আমরা ইমেইল করতে পারি।

চিঠির লেখার যেমন কিছু নিয়মকানুন আছে, ইমেইল করারও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন ও আদব- কায়দা আছে।

তুমি যদি ইমেইল পাঠাতে চাও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই যে কোনো ইমেইল প্রোভাইডারের একটি অ্যাকাউন্ট থাকা লাগবে। যেমন- জি মেইল(Gmail), ইয়াহু মেইল(Yahoo! Mail), আউটলুক (Outlook), প্রোটোনমেইল(ProtonMail) ইত্যাদি।

উদাহরণ স্বরূপ, তুমি একটি জিমেইল (gmail) অ্যাকাউন্ট খোলার পর কাউকে মেইল করতে চাইলে প্রথমে তোমাকে জিমেইলের কম্পোজ(Compose) অপশনে যেতে হবে। সেখানে একটি বক্স আসবে। বক্সের ‘To’ লেখা জায়গাটিতে যার কাছে মেইলটি পাঠাতে চাও তার ইমেইল ঠিকানা লিখতে হবে।এরপর, ‘Subject’ লেখা জায়গাটিতে মেইলের শিরোনাম বা যে বিষয়ে মেইল করা হবে সেই বিষয়টি সংক্ষেপে ১ লাইনে বা কয়েকটি শব্দে লিখতে হবে। এরপর নিচের দিকে ‘Compose email’ লেখা জায়গায় মেইলের মূল কথাগুলো লিখতে হবে। মেইলটি শুরু করতে হবে সুন্দর সম্ভাষণ দিয়ে। স্কুল কলেজের শিক্ষককে মেইল করতে হলে প্রিয়/শ্রদ্ধেয় স্যার লিখে শুরু করা যেতে পারে, বন্ধু বা আত্মীয় স্বজন হলে প্রিয় বন্ধু বা প্রিয়/শ্রদ্ধেয় …. লিখে শুরু করা যাবে।

 মেইল লেখার সময় ভাষার প্রতি খুব সচেতন থাকতে হবে। বয়স্ক কেউ, শিক্ষক, উচ্চপদস্থ কারো কাছে মেইল লেখার সময় অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে(যেমন-ফেসবুক,ম্যাসেঞ্জার,হোয়াটস্‌ অ্যাপ) প্রচলিত শব্দ যেমন- অ্যাসাপ (asap), লোল (lol), btw এরকম শব্দগুলো পুরোপুরি বর্জন করতে হবে।

বানানের প্রতি খেয়াল রাখবে এবং মূল কথাগুলো খুব বেশি বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই। ৪-৫ লাইনের ভিতরে যদি মূল কথাগুলো সম্পন্ন করা যায় তবে খুব ভালো। ধরো, তুমি তোমার বাড়ির কাজ জমা দিবে । এখানে তুমি খুব সংক্ষেপে লিখে দিতে পারো তুমি কোন বিষয়ের বাড়ির কাজটি জমা দিচ্ছো এবং ইমেইলের শেষে নিজের নাম ও পরিচয় সংক্ষেপে লেখা ভালো।

এখন তাহলে, এই যে তোমার বাড়ির কাজ জমা দিবে,এই বাড়ির কাজটি তুমি  কীভাবে ইমেইলে সংযুক্ত করবে সেটি নিয়ে আলোচনা করি।

ডেস্কটপ বা কম্পিউটারের সাহায্যে ইমেইলে তোমার বিভিন্ন কাজগুলো ছবি বা ফাইল হিসেবে যুক্ত করার জন্য ইমেইল বক্সের নীচে খেয়াল করলে দেখতে পাবে অনেকগুলো আইকন আছে যার একটি হলো অ্যাটাচ ফাইল। আর মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে এই আইকনটি বক্সের উপরে ডানদিকে থাকতে পারে। সেই অ্যাটাচ ফাইলে ক্লিক করে ওই ডিজিটাল ডিভাইসের যেখানে প্রয়োজনীয় ফাইলটি আছে সেখান থেকে ফাইলটি নির্বাচন করে তা ইমেইলের সাথে যুক্ত করতে হবে।

এরপর সেন্ড(send)- এ ক্লিক করলে ফাইলসহ ইমেইলটি প্রদত্ত ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। এখানে সেন্ড(send) লেখাটির পরিবর্তে তিনকোনা আকৃতির একটি সেন্ড আইকন ও থাকতে পারে। ফাইলের সাইজ যদি ২৫ মেগাবাইটের(25 MB) বেশী হয় তবে সেই ফাইল মেইলে সংযুক্ত করা যাবে না। যদি বেশী সংখ্যক ফাইল হয় বা ফাইলের সাইজ অনেক বড় হয় তবে ফাইলটি বা ফাইলগুলো গুগল ড্রাইভে আপলোড করে সেই লিংকটি প্রয়োজনীয় ঠিকানায় পাঠানো যেতে পারে। 

একইভাবে খুব সহজে তুমি সহপাঠীদের সাথে ইমেইলের মাধ্যমে শিক্ষা সম্পর্কিত যে কোনো নোট নিজেদের মধ্যে শেয়ার করতে পারবে।