তথ্যের সত্যাসত্য এবং নির্ভরযোগ্যতা যাচাইবাছাই করার প্রয়োজনীয়তা

কোন এক অখ্যাত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে উত্তেজনাপূর্ণ শিরোনাম দেখে আপনি শেয়ার করে দিলেন আপনার ফেসবুক পেইজে। ২-১ দিন পর জানলেন যে আপনার শেয়ার করা তথ্যটি ভুল বা মিথ্যা। আসলে ভুল তথ্য প্রচার করে অপরাধ করেছে অখ্যাত সংবাদ মাধ্যমটি। আর সেই সংবাদটি যাচাই বাছাই না করে ফেসবুকে শেয়ার করে আপনিও অপরাধের অংশীদার হয়েছেন।

অখ্যাত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অনেক সংবাদ মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি পাঠক পাওয়ার আশায় আগ্রাসী ভূমিকায় নেমেছে। শুধু কাল্পনিক বা ভুয়া খবর প্রচার করার মাধ্যমেই নয় অনুমান কিংবা নেহাত গুজবকে সত্যের মোড়কে পরিবেশন, বাণিজ্যিক কিংবা অন্যান্য অভিসন্ধি নিয়ে সংবাদ প্রচার, নিজেদের কাটতি নিয়ে সাজানো পরিসংখ্যান হাজির করা—এ রকম অনেক প্রবণতাই আছে অনলাইন সাংবাদিকতায়। আবার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেউ কেউ ভূঞা বা মিথ্যা সংবাদ ছড়াতে পারে। তাই এ রকম সংবাদ বিশ্বাস করা বা শেয়ার করার আগে তথ্যসূত্রের সন্ধান করুন। তথ্যের সঠিকতা যাচাই করুন।

 সঠিক তথ্য যেমন বড় বড় সমস্যার সমাধান করতে পারে, তেমনি ভুল তথ্য অনেক বড় বড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক তথ্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, মিথ্যা বা ভুল তথ্য তেমন ভয়ঙ্কর। মিথ্যা বা ভুল তথ্যের কারণে মানুষ প্রতারিত হতে পারে, মানুষের ভিতরে আতঙ্ক তৈরি হতে পারে, সামাজিক হেনস্তার শিকার হতে পারে, মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারে, সামাজিক ও রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত এমন কি প্রাণহানিও ঘটতে পারে। এছাড়া আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি, সামাজিকভাবে হেয় হওয়া সহ আরও অনেক সমস্যার উদ্ভব ঘটতে পারে ভুল তথ্য শেয়ারের ফলে।  এজন্য কোন তথ্য প্রকাশ বা শেয়ারের আগে তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। 

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আপনি যখন কোন তথ্য পোস্ট বা শেয়ার করবেন তখন অবশ্যই আপনাকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। পোস্ট বা শেয়ার করার আগে আপনাকে তথ্যের নির্ভুলতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া এই তথ্য শেয়ারের কোন ঝুঁকি আছে কিনা, এর ফলে কোন বিভ্রান্তি, ভুল বোঝাবুঝি বা সংঘাতের সৃষ্টি হবে কিনা এসব বিষয়ও ভাবা দরকার। কেননা আপনার দেওয়া তথ্যে কোন ভুল থাকলে সমস্ত দায় আপনাকেই বহন করতে হবে। তাই যেকোন কিছু পোষ্ট বা শেয়ার করার আগে অনেকবার ভাবতে হবে। শেয়ার বা পোষ্ট করার পূর্বে বিষয়বস্তু সত্য কিনা তা যাচাই করতে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং সংবাদ মাধ্যমে খোঁজ করতে হবে। বিষয়বস্তু নির্মাতার কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে সে সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে।  বিষয়বস্তু তৈরি করার সময় নির্মাতা তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য মিথ্যা মতামতকে সত্য হিসাবে উপস্থাপন করতে পারে। বিষয়বস্তুটি সমাজের কারো উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা তা চিন্তা করতে হবে। টাকার বিনিময়ে বা নিজ থেকেই স্বেচ্ছায় যদি আপনি মিথ্যা বা ভুল কিছু শেয়ার বা পোষ্ট করে থাকেন তবে আপনি সমাজের ক্ষতিই করছেন।