ভুল/মিথ্যা তথ্য জেনে বুঝে/ ইচ্ছাকৃত ব্যবহার বা অনলাইন সেবা ও সামাজিক গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই না করে ব্যবহার করার ঝুঁকিগুলো কী

রুবেল আহমেদ একজন পেশাজীবী খেলোয়াড়। হুট করে তার ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে সে বেশ চিন্তিত। পরিচিত মানুষদের প্রায়ই জিজ্ঞেস করে কোনো সহজ উপায় আছে কিনা ওজন দ্রুত কমিয়ে ফেলার জন্য । একেক জন একেক রকমের বুদ্ধি দেয়; মাঝে মাঝে সে কিছু উপায় মেনেও চলে তবে তেমন কোনো ফলাফল সে পাচ্ছে না।

তার বন্ধু রাকেশ বুদ্ধি দিলো ইউটিউবে ভালো ভালো কিছু উপদেশ দেয় যেগুলো মেনে চললে তার উপকার হবে। এটা জেনে সে ইউটিউবের বিভিন্ন ভিডিও দেখা শুরু করলো এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে থাকলো। বেশ কিছুদিন পর সে খেয়াল করলো যে তার কোনো ওজনই কমে নাই বরং সে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি দুর্বল হয়ে গেছে।

ঘটনাটি থেকে আমরা কী বুঝতে পারলাম? কোনো ধরনের সামাজিক মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমরা যাচাই না করে কখনোই ব্যবহার করবো না। হতে পারে সেটি কোনো স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট অথবা রূপচর্চা বিষয়ক ওয়েবসাইট; যেই ওয়েবসাইট হোক না কেনো আমাদেরকে অবশ্যই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করে তথ্যসমূহ ব্যবহার করতে হবে। 

যে কোনো ধরনের ভুল তথ্য আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। যেমন-

১) বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন পেইজগুলো থেকে অনলাইন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সাবধানতা অবলম্বন করবেন। মিথ্যা বা ভুল তথ্যের কারণে একদিকে আপনি যেমন প্রতারিত হতে পারেন, তেমনি আরেকদিকে ভুল তথ্য ব্যবহার করার ফলে আপনার শারীরিক ও মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

২) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাপ্ত যেকোনো তথ্যই দেখা মাত্রই শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন। এতে করে মানুষের ভিতরে আতঙ্ক তৈরি হতে পারে, মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারে।

৩) যে কোন তথ্য শেয়ার করার পূর্বে ভেবে নিবেন যে তথ্যটি শেয়ার করার ফলে কোনো জাতি-গোষ্ঠীকে ছোট করা হচ্ছে কি না। তা না হলে সে জাতি সামাজিকভাবে হেয় অনুভব করতে পারে।

৪) কিছু ভুল বা মিথ্যা তথ্য শেয়ার করলে বা কোনো কথোপকথনে ব্যবহার করলে সামাজিক ও রাজনৈতিক হানাহানি, সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে, এমন কি প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

৫) অনেক সময় অনেক ধরনের অনলাইন সেবা লাভ করার জন্য আমাদের অগ্রিম টাকা প্রদান করতে হয়। যদি এমন হয়ে থাকে যে অনলাইন সেবার পেইজ বা ওয়েবসাইটটি ভুল সেবা প্রদান করে অথবা সেবা প্রদান করতে অস্বীকার করে তাহলে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিরও সম্ভাবনা থাকতে পারে। 

এজন্য যেকোনো তথ্য প্রকাশ বা শেয়ারের আগে তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আপনি যখন কোন তথ্য পোস্ট বা শেয়ার করবেন তখন অবশ্যই দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কোনো কিছু পোস্ট বা শেয়ার করার আগে তথ্যের নির্ভুলতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া এই তথ্য শেয়ারের ফলে কোন ঝুঁকি আছে কিনা বা কোন বিভ্রান্তি, ভুল বোঝাবুঝি বা সংঘাতের সৃষ্টি হবে কিনা এসব বিষয়ও ভাবা দরকার। শেয়ার বা পোষ্ট করার পূর্বে বিষয়বস্তু সত্য কিনা তা যাচাই করতে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং সংবাদ মাধ্যমে খোঁজ করতে হবে। নতুবা একদিকে ভুল বা মিথ্যা তথ্য যেমন আমাদের শারীরিক, মানসিক বা আর্থিক ক্ষতি সাধন হতে পারে, অন্যদিকে একটি জাতি ও দেশের জন্যও হুমকিস্বরূপ।